ডায়াবেটিস রোগীরা কি মেডিসিনাল মধু খেতে পারবে? কেন আমাদের মেডিসিনাল মধু খাওয়া উচিত

 

                        ডায়াবেটিস রোগীরা কি মেডিসিনাল মধু খেতে পারবে?

 

ঔষধি গুনাগুনে ভরপুর মধু


তাই মানব দেহের জন্য অত্তান্ত জরুরি হচ্ছে এই মধু ,আমাদের পূর্ব পুরুষ তারও পূর্ব পুরুষরা অত্তান্ত গুরুত্তের সাথে মধু ব্যাবহার করে এসেছে , তাই আজকের এই আধুনিক যুগেও মধুর গুরুত্ব এতটুকু কমেনি, আসলে মধু সর্বগুণ সম্পন্ন এমন এক নেয়ামথ যা বলে শেষ করা যাবেনা


মধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়-

সাধারানত প্রাকিতিক মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠান্ডা লাগা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে প্রতিদিন হালকা গরম পানির সাথে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে খান।
মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ,বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক ও কপার সহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও  অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান যা আমাদের দেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় কাজ করে।
মধুর ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, সি কপার , আয়োডিন ও জিংক দেহে এইচডিএল (ভালো) কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়, ফলে মধু কোলেস্টেরল সংক্রান্ত রোগ থকে দেহকে মুক্ত রাখে, দিনে অন্তত এক চামচ মধু খেয়ে নিন,যেভাবে আপনার ভালো লাগে।


ডায়াবেটিক রোগীদের মধু পান করতে বলি যে কারনে


লাখ লাখ মৌমাছির অক্লান্ত শ্রমের ফসল মধু। মৌমাছিরা নানা রকম ফুলে বিচারণ করে রেণু ও মিষ্টি রস সংগ্রহ করে পাকস্থলীতে জমা রাখে। এরপর মৌমাছির মুখ নিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয় এরাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে মধু তৈরি হয়। মানবদেহে মধুর বিপাকক্রিয়া স্বতন্ত্র ধরনের। মধু অনেকগুলো রোগের সার্বজনীন প্রতিকারও। তবে সব মধু নয়; এটি প্রাকৃতিক এবং মৌমাছির স্বতঃস্ফূর্ত আহরণের মাধ্যমে উৎপাদিত হতে হবে। মানবদেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে প্রকৃতির এই উৎকৃষ্ট পানীয়। মানবদেহে মধুর বিপাক পক্রিয়া চিনির মতো নয়। তাই মিষ্টি হওয়া সত্ত্বেও ডায়াবেটিক রোগীদের অপ্রক্রিয়াজাত মধু পানের পরামর্শ প্রদান করি। এর রাসায়নিক সংমিশ্রণ চিনি বা অন্যান্য মিষ্টি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সে কারনে ডায়াবেটিক রোগীদের ১ চা চামচ মধু ১ চিমটি অর্গানিক হলুদ এবং এক চিমটি কালো গোল মরিচ গুঁড়া ও ১ টেবিল চামচ মেডিসিন্যাল নারকেল তেলের সাথে বা ১ টেবিল চামচ অর্গানিক অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারবেন।
জেনে রাখুন, এক চা চামচ অপ্রক্রিয়াজাত মধুতে মাত্র ২০ ক্যালরি ও মাত্র ৫গ্রাম চিনি রয়েছে এবং কোনো চর্বি নেই। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার এর জাতীয় পুষ্টি ডাটাবেজের তথ্য অনুযায়ী, এক টেবিল চামচ মধুতে ৬৪ ক্যালরি, ১৭.৩ গ্রাম চিনি রয়েছে এবং আঁশ ও চর্বি নেই। আরেকটু বিস্তারিত মধুর প্রোফাইলটি দেখা যাক। মধুতে ফ্রুকটোজ ৩৮.২ শতাংশ, গ্লুকোজ ৩১.৩ শতাংশ, মেলটোজ ৭.১ শতাংশ সুকরোজ ১.৩ শতাংশ, পানি ১৭.২ শতাংশ, উচ্চমাত্রার চিনি ১.৫ শতাংশ, অ্যাশ ০.২ শতাংশ ও অন্যান্য ট্রেস মনারেল রয়েছে ৩.২ শতাংশ। 
মধু একটি সম্পূর্ণ কার্যকর সতেজ খাদ্য। এতে ক্যাটালাসসহ (ক্যাটালাস এক ধরনের এনজাইম যা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডকে পৃথক করে পানি ও অক্সিজেনে রূপান্তর করে) একাধিক এনজাইম, প্রোলিনসহ ১৮ টি ফ্রি অ্যামিনো অ্যাসিড, প্রায় সবগুলো ভিটামিন গ্রুপ বি, ভিটামিন সি, রয়েছে। এরসাথে ক্যালসিয়াম, আয়রন, দস্তা, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সেলোনিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং অন্যান্য খনিজ উপাদন আছে। 
মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর প্রধান গ্রুপ হোল ফ্লেভোনয়েডস। ফ্লেভোনয়েডস এমন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা, মানুষের শরীরে কোষ নষ্ট করা উপাদান খুজে বের করে ধ্বংস করে দেয়। এ ছাড়াও রয়েছে অ্যাসিটিক, ম্যালিক, গ্লুকোনিক, সাইট্রিক, সুসিনিক, বাটানোয়িক অ্যাসিডের মত জৈব অ্যাসিড। এটি খাদ্য থেকে নানা রকম পুষ্টি শোষন করে শরীরে শক্তির যোগান দেয়। তাই আমার ক্লিনিকে ডায়াবেটিসসহ প্রতিটি রোগীকে মধু পান করাই।