অন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন


মানবদেহের সুস্থতা অনেকাংশে অন্ত্রের উপর নির্ভর করে। কেননা আমাদের রোগ প্রতিরোধক কোষের ৭০% অন্ত্রের ভেতরে বাস করে। অন্য কোথায় অন্ত্রের চিত্রটিই আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে প্রকাশ পায় এবং আপনার জীবনযাত্রার চিত্রটি অন্ত্রে প্রকাশিত হয়। চারটি ভিটামিন অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ। এগুলো হোল- ভিটামিন এ, সি, ডি এবং ই। এই পুষ্টি উপাদান গুলোই অন্ত্রের বিপাকের জন্য রাসায়নিক নিঃসারণ এবং অ্যান্টিমাইক্রোবাইয়াল পেপটাইডস (অ্যামিনো অ্যাসিডের শর্ট চেইন), অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকর রাখে। আমাদের অন্ত্রে হাজার রকমের কোটি কোটি ক্ষুদ্র জীবাণু বাস করে, অর্থাৎ এগুলো ব্যাকটেরিয়া। এসব ব্যাকটেরিয়া সাধারণত আন্ত্রিক মাইক্রোবায়োটা বলা হয়। এরা কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপত্তা প্রহরীর মতো। এরা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করে। খাদ্য পরপাক ও পুষ্টি পরিশোষণে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমাদের খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে অন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে পারি। অতিরিক্ত চিনি, চর্বি এবং কম আঁশযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত ময়দা, সাদা ভাত, কোমল পানীয়, অক্সিডাইজড ভেজিটেবল অয়েল, অস্বাস্থ্যকর পশুর চর্বি এবং প্রোটিন, দুগ্ধজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খবার অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্য নষ্ট এবং নানারকম রোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু আঁশযুক্ত সবজি, ফলমূল এবং শস্যদানাযুক্ত খাবার উপযুক্ত ব্যাটোরিয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে।
যেসব খাবারে ভিটামিন এ, সি, ডি এবং ই পাবেন
ভিটামিন এঃ দেহের চর্বি দ্রবণীয় পুষ্টিউপাদান হচ্ছে ভিটামিন ‘এ’ । কমলা রঙের খাবারগুলোতে এই ভিটামিন পাওয়া যায়। মিষ্টি আলু, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, এপ্রিকট এ প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে। এটি অন্যান্য রঙের শাক- সবজিতেও আছে। যেমনঃ পালংশাক, গরুর কলিজা, ব্রোকলি।
ভিটামিন সিঃ দেহের পানিতে দ্রবণীয় পুষ্টি উপাদান ভিটামিন ‘সি’। বিভিন্ন টকজাতীয় ফল, বেল পেপার, অমলিক, লেবু, বাতাবি লেবু, ব্রোকলি এবং স্ট্রবেরিতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে।
ভিটামিন ডিঃ কমপক্ষে ২০ মিনিট সূর্যের আলো দেহে লাগলে এই ভিটামিন তৈরি হয়। এটি সালমন এবং টুনা ও ডিমে পাওয়া যায়। আপনি যদি দেহে রোদ লাগানোর সুযোগ না পান তবে সাপলিমেন্ট নিতে পারেন।
জেনে রাখা ভালো, জন্মের পরে শিশুর অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া যেন আবাস তৈরি করতে পারে এটা খুবই গ্রুরুত্বপূর্ণ। কারন এর উপরে বকি জীবনের অনেক রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া বা না হওয়া নির্ভরশীল। কিন্তু জন্মের পরে কিভাবে উপযুক্ত ব্যাকটেরিয়াকে অন্ত্রে পরিবেশ তৈরি করতে দেয়া যাবে? এর উত্তর হচ্ছে, শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জোগান দিতে পারে। আর এ জন্য মায়ের বুকের দুধ পান করালে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। বাইরের কোন দুধই শিশুর উপকারী আন্ত্রিক মাইক্রোবায়োটা যোগানে বিন্দুমাত্র কাজে আসে না।